আগামী রবিবার শুরু হবে বগুড়ার জামাইমেলা
আবু সাঈদ, (বগুড়া) প্রতিনিধি: জামাই এমনিতেই আদরের জিনিস । শ্বশুর বাড়ীতেই কখনোই আদরের কমতি হয় না। এ জামাইদের নিয়ে মেলা শুরু হলো বগুড়া সদর উপজেলায়। বৈশাখ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে (৫০) টি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। কোথাও একই একই দিনে আবার কোথাও ভিন্ন দিনে এ মেলার আয়োজন করা হয়। এ বছর এরুলিয়া ইউনিয়নের ঘোলাগাড়ী গ্রামে শুরু হলো ঐতিহ্যের এই জামাই মেলা । এরুলিয়া ইউনিয়নের মো: মন্টু মাস্টার জানান, মেলা উপলক্ষে জামাই-মেয়ে সহ আতœীয় স্বজনদের ধুম ধাম করে খাওয়ানো হয়। বেশি ভাগ পরিবারেই মেয়ে ও জামাই প্রধান আতœীয় বলে জামাইদের নিমন্ত্রণ পড়তো বেশি। এ কারনে ধীরে ধীরে নাম করন হয়ে ওঠে জ্যৈষ্ঠ জামাই মেলা। স্থানীয়রা জানান , বৈশাখ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে (৫০) টি স্থানে এক দিনের মেলার আয়োজন করা হয়। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও মেলার আয়োজন থাকবে। প্রতিটি মেলায় থাকবে বাঙালির চিরায়ত লাঠি খেলা,পাতাখেলা, চালুন খেলা সহ বিনোদন মুলক কত না খেলা। এসবের পাশাপাশি রয়েছে শিশুদের জন্য নাগরদোলা ও চরকি। মেলা উপলক্ষে প্রতিটি গ্রামে চলে গৃহিনীদের ঘর সাজানো ও ধোয়ামোছার কাজ। গ্রামগুলায় একদিন আগেই আনা হয় জামাই, মেয়ে ও নিকট আতœীয়দের। তাদের খাওয়ানো হয় জ্যৈষ্ঠ মাসের বিভিন্ন ফল-ফলাদি। সেই সঙ্গে নতুন ধানের, নতুন চালের বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও পায়েস। জানা যায়, কয়েকশ বছর আগে সাধু, সন্ন্যাসী, ফকির ও জটাধারী মহিলাদের আনাগোনা ছিল এ উপজেলায়। মানুষ নানা কারনে তাদের কাছে যেত। কারও কারও মতে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে যখন বৃষ্টির পানির থাকতো না তখন স্থনীয় লোকজন বৃষ্টির জন্য লালসালু নিয়ে নেচে গেয়ে গ্রামে গ্রামে চাল তুলত। সেই চাল দিয়ে বাশেঁর মাথায় লালসালু টানিয়ে মেলার আয়োজন করত। আয়োজকরা সেখানে রান্না-বান্না করে সবাই মিলে খেয়ে একসঙ্গে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করত। সেই সময় থেকেই উপজেলার বিভিন্ন স্থান এ মেলা হয়ে আসছে। আগে এই মেলাকে মাদার পীরের মেলা অথবা নিশানের মেলা বলা হত। একে ঘিরে উৎসব মুখর হয়ে উঠত এলাকা। পরে স্থানীয় জামাই মেয়ে এবং আতœীয় স্বজনদের নিমন্ত্রণ করতে শুরু করে। কাল ক্রমে এই সব মেলার নাম হয়ে ওঠে জ্যৈষ্ঠর জামাই মেলা। যা নিশিন্দারা ইউনিয়নের নূনগোলা মেলার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে।