কিস্তির টাকা না দেওয়াই আশ্রয়ন প্রকল্পের বৃদ্ধাকে মারপিট
রশিদুর রহমান রানা শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ কিস্তির টাকা দিতে না পারাই আদম ব্যাপারী আশরাফুল আলী ঠান্ডা কর্তৃক এক বৃদ্ধাকে ভরা বাজারে মারপিটের খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলা কিচক ইউনিয়নে শোলাগাড়ী বাজারে। বৃদ্ধা সিদ্দিকা কিচক শোলাগাড়ী আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
থানার অভিযোগ ও শোলাগাড়ী আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের সৃত্রে জানা যায়
কিচক গ্রামীণ ব্যাংক শাখা থেকে গত ১১ নভেম্বর ৪০হাজার টাকা ঋন নিয়ে সিদ্দিকা বেগম নিয়মিত কিস্তি দিয়ে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারনে কর্মহীন হয়ে পড়ায় তিনি কিস্তি দিতে পারছেনা বলে গ্রামীন ব্যাংককে জানায়। গ্রামীন ব্যাংক থেকে বলা হয় আপনার যখন সুবিধা হবে তখন কিস্তি দিবেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৬টার সময় স্থানীয় শোলাগাড়ী হাটে বাজার নিতে গেলে আদম ব্যাপারী আশরাফ আলী ঠান্ডা ঋণ গ্রহীতা বৃদ্ধা সিদ্দিকাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে বলে কিস্তি বাকী রাখছিস কেন, গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে বৃদ্ধাকে বাজারের মধ্যে টানা হ্যাচরা ও মারপিট করে বিবস্ত্র করে ফেলে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াকুব বলেন, বাজারের লোকজনের সামনে বৃদ্ধা সিদ্দিকাকে চুল ধরে ছেঁচরিয়ে নিয়ে এসে মারপিট করে, এমতাবস্থায় সে বিবস্ত্র হয়ে যায়। সে প্রভাবশালী হওয়াই ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারে না।
বাদী সিদ্দিকা বেগম বলেন, আমাকে কিস্তির টাকাকে কেন্দ্র করে বিনা উস্কানিতে আদম ব্যাপারী ঠান্ডা বাজারে জনতার সামনে মারপিট করে মানহানি করেছে, আমি এর বিচার চাই।
শোলাগাড়ী আশ্রায়ন প্রকল্পের সভাপতি মান্নান মন্ডল বলেন, কথিত আওয়ামীলীগ নেতা আশরাফ আলী একজন মানব পাচারকারী, অল্প দিনের মধ্যে কিছু টাকার মালিক হওয়ায় মাঝে মাঝে আশ্রায়ন প্রকল্পের অসহায় মানুষকে মারপিটসহ বিভিন্ন হয়রানী করে। তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ।
আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী হযরত আলী বলেন, আশরাফ আলী এতোটাই চরিত্রহীন যে, সে আমার প্রতিবন্ধিত্বের সুযোগ নিয়ে আমার স্ত্রীকে প্রলোভন দিয়ে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে আমার সংসার নষ্ট করেছে।
কিচক শাখা গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা কিস্তির টাকার জন্য কাউকে মারপিটতো দুরের কথা কোন কঠিন কথাও বলিনা, এটা তাদের পারিবারিক ঝামেলা। এঘটনার জন্য আমরা খুব বিবৃত হয়েছি।
বিবাদী আশরাফ আলী ঠান্ডার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
শিবগঞ্জ থানা ওসি অপারেশন হরিদাস মন্ডল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আশ্রায়ন প্রকল্পের মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবীর বলেন, বিষয়টি আমারা জানা নেই, মারপিটের বিষয়টি ফৌজদার অপরাধ সুতরাং থানা পুলিশ বিষয়টি দেখবে।