মহাস্থানে মানুষের ভিটেমাটি রক্ষার্থে ও মিথ্যা মামলায় প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি: ঐতিহাসিক গড় মহাস্থানের ১০ হাজার মানুষের ভিটেমাটি রক্ষার্থে ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন। রবিবার সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে রায়নগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে গড়-মহাস্থান মৌজার জেএল নং ২৪৫, মোট জমির পরিমাণ ৭৫.৯৩ একর। তার মধ্যে ব্যক্তিগত মালিকানায় ৫৮৬.১১ একর। মহাস্থান মাজার মসজিদের ১০২.৭৩ একর। এবং প্রত্নতত্ত্বের ৬২.০৯ একর। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তি সি,এস, এম আর আর, এবং আর এস রেকর্ড মূলে সত্ত্ববান ও দখিলকার হিসেবে খাজনাদি আদায় নিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বংশানুক্রমে গৃহাদি নির্মাণ করে বসবাস করে আসতেছেন গড়-মহাস্থান এলাকাবাসী। যেখান থেকে জমি নিতে চাচ্ছে সেখানে প্রায় দেড় হাজার পরিবারের ১০ হাজার সাধারণ লোকের বসবাস। এখানে আবাদি জমি ও বসতভিটা রয়েছে। এখানে তারা বাপ-দাদার আমল থেকে চাষাবাদ করে রুজি রোজগারের মাধ্যমে সংসার চালিয়ে আসছে। এখানে নিজেদের জায়গায় বসত বাড়ি নির্মাণ, বাড়ি নিরাপত্তা প্রাচীর, ড্রেন সহ নিজেদের প্রয়োজনীয় কিছু নির্মাণ করলেই দেয়া হয় মিথ্যা হয়রানী মূলক মামলা। দুঃখের বিষয় হলো, এলাকার কেউ মারা গেলে পারিবারিক নিজেদের জায়গায় কবর দিতে বাধা প্রদান করে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। নিরীহ এলাকাবাসীদের মাতৃভূমি অধিগ্রহণ করার পায়তারা মহাস্থান জাদুঘর তথা (আরকিওলজি) ডিপার্টমেন্টের এ প্রচেষ্টা প্রতিহত করার জন্য গড় মহাস্থান উত্তরপাড়ায় এলাকার স্থানীয় হাজার হাজার নারী- পুরুষ গড় রক্ষা কমিটির সমন্বয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ২০১০ সালে হিউমান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামক সংগঠন মহামান্য হাইকোর্টে এসব ভুক্তভোগীদের দিক বিবেচনা করে একটি রিট পিটিশন মামলা অনয়ন করলে মহামান্য হাইকোর্ট বেশ কিছু নির্দেশনা মূলক পর্যবেক্ষন সহ রিট মোকদ্দমা টি রায় ও আদেশ প্রদান করে মামলা নিষ্পত্তি করেন। উক্ত রায় আদেশ কেবল মাত্র প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দেশনী স্থানে খনন কাজ বন্ধ করার আদেশ থাকলেও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর এর বেশ কিছু অসাধু কর্মকর্তা ব্যক্তিরা লাভের আশায় অন্যায় ভাবে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অনুসরণ না করে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে খেয়াল খুশি মত গড় মহাস্থান এলাকার সাধারণ মানুষের বসতভিটা অবকাঠামো নির্মাণ প্রভৃতি সহ গ্রহস্থলি সকল প্রকার খনন জনিত কাজ বন্ধ করে দেয়। শুধু তাই নয়, এলাকার একাধিক ব্যক্তির নামে মিথ্যা মামলা করেছে প্রত্নতাত্ত্বিক।
গড়-মহাস্থানের একাধিক প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে কথা বললে তারা ক্ষুব্ধপ্রতিক্রিয়ায় জানান, আমাদের জান দেব কিন্তু প্রত্নতাত্ত্বিককে এক ইঞ্চি জমিও দিব না। এখানে আমরা যুগ যুগ দরে বসবাস ও চাষাবাস করে আসছি। এখানে রয়েছে আমাদের বাপ-দাদার কবর। আমরা আমাদের বাপ-দাদার কবরের উপর কারো একটি ইটও লাগাতে দিবো না। “তাতে করে জান যায় যাবে”। মহাস্থানগড় জাদুঘর প্রত্নতাত্ত্বিক এখান থেকে তার সিদ্ধান্ত সড়িয়ে না নিলে ভবিষ্যতে আমরা আরোও কঠিন আন্দোলনে লিপ্ত হবো।
হাজারো মানুষের এ অবস্থান কর্মসূচি পরবর্তী সময়ে বিক্ষোভ সমাবেশে পরিণত হবে বলে তারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন। এ সময় নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, ছাত্র-শিক্ষকসহ সমাজের সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এক কাতারে নেমে এসে অবিলম্বে ভূমি অধিগ্রণের সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রায়নগর ইউপি চেয়ারম্যান, শফিকুল ইসলাম শফি, ইউপি সসদ্য আলাউদ্দিন, সাবেক ইউপি সদস্য আছালত জানান, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী মোঃ শাহিনুর ইসলাম শাহিন, মোশারফ হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, বেলায়েত হোসেন বাবলু প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী মোঃ তাজুল ইসলাম সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ