কুরআনে করোনার কারন

বার্তা বিভাগবার্তা বিভাগ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  08:15 AM, 26 June 2020

কুরআনে বর্ণীত করোনার যত কারন

আমরা গত সপ্তাহে আলোচনা করেছিলাম, রাসুল সঃ এর ভবিষ্যৎ বানীতে করোনার কারন। সেখানে সুনিদৃষ্ট ভাবে একটি কারনকে জোর দিবার চেষ্টা করেছি। আজ খুব বেশি ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করব না। কেবল মাত্র কুরআন পাকে মহান রব্বুল আ’লামীন কি বলেছেন,  তার উল্লেখ করব ইনশাল্লাহ।

শুরুতেই সুরা আশ-শুরার ৩০ নম্বর আয়াতকে যদি আমরা উল্লেখ করি তাহলে দেখব সেখানে তিনি কী বলেছেন। “তোমাদেরকে যেসব বিপদাপদ স্পর্শ করে, সেগুলো তোমাদেরই কৃতকর্মের কারণে। আর অনেক গুনাহ তিনি (আল্লাহ) ক্ষমা করে দেন।”

এই আয়াতের দুইটা দিক। এক, যে বিপদাপদ হয়, তা আমাদেরই হাতের কামাই। মানে আমাদের কৃতকর্মের ফল। দুই, তিনি অনেক গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তার মানে হলো, তিনি যে উদ্দেশ্যে মানব সৃষ্টি করেছেন, তা না করে বরং মানুষ যখন একের পর এক উল্টা কাজ করে চলে,  তখন স্বাভাবিক ভাবেই তার রাগ করবার কথা। ফলশ্রুতিতে তিনি ইচ্ছা করলে একটি জনপদকে নিমিষেই ধ্বংস করতে পারেন। কিন্তু তিনি তা করেন না। তিনি অত্যন্ত ধৈর্যশীল, পরম দয়াবান এবং মায়াবান। আর তাই বান্দার অনেক কিছু ক্ষমা করতে থাকেন। কিন্তু যখন বান্দা একেবারে সীমালঙ্ঘন করতে থাকে, তখন কিছুটা বিপদাপদের সম্মুখীন করেন।

সুরা রুমের ৪১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা’লা বলেন- “জলে ও স্থলে মানুষের কৃতকর্মের দরুণ বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাআলা তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।”
এই আয়তটিতেও দুটি অংশ। যার প্রথমটি এক নং আয়াতের প্রথম অংশের মতই। দ্বিতীয়টি হলো, যাতে তারা ফিরে আসে। অর্থাৎ বান্দাদের তিনি এতটাই ভালোবাসেন, একেবারে নিঃশেষ করে দিতে চান না। তিনি চান বান্দাদেরকে সতর্ক করতে। যাতে তাদের হুশ ফেরে। তারা সতর্ক হয়ে চলে। তওবা করে আবারও ফিরে আসে আল্লাহর দিকে।

এরপর আমরা যদি আরও কিছু আয়াত উল্লেখ করি তাহলে দেখব-
তারপর আমি তাদের ওপর রোগব্যাধি, অভাব, দারিদ্র্য, ক্ষুধা চাপিয়ে দিয়েছিলাম, যেন তারা আমার কাছে নম্রতাসহ নতি স্বীকার করে। [ সুরা আন‌আম: আয়াত-৪২]

নিশ্চয়ই আল্লাহ মশা কিংবা এর চাইতেও তুচ্ছ বিষয় (ভাইরাস বা জীবাণু) দিয়ে উদাহরণ বা তাঁর নিদর্শন প্রকাশ করতে লজ্জা বোধ করেন না। [সুরা বাকারা: আয়াত-২৬ ]

আমি জালিমদের সুযোগ দেই বা বেঁচে থাকার সময় দে‌ই, তাদের পাপকে পাকাপোক্ত করার জন্য। [সুরা আল ইমরান: আয়াত- ১৭৮ ]
অবশ্যই আমি তোমাদের পূর্বে বহু জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি, যখন তারা সীমা অতিক্রম করেছিল। [সুরা ইউনুস: আয়াত-১৩]

এবার এই আয়াত গুলো যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখব, খুব সহজ-সরল ভাষায় গজব কিংবা কোনো মহামারীর স্পষ্ট কারন উল্লেখ করা হয়েছে। আর সে কারনকে যদি হাদিস দিয়ে ব্যাখ্যা করি, (যেহেতু হাদিস কুরআনেরই ব্যাখ্যা) তাহলে আবার সেই গত সপ্তাহেরই আলোচনা নিয়ে আসতে হয়। আলোচনা লম্বা না করে তা আর উল্লেখ করলাম না। শুধু এতটুকু বলব, এরকম মহামারীর বিভিন্ন কারনের মধ্যে রাসুল সঃ এর বাণী অনুযায়ী সুনিদৃষ্ট করে বললে বলতেই পারি যে, আজকের দুনিয়ার অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, অবৈধ সম্পর্ক, জিনা-ব্যাভিচার, সমকামিতা,  লিভটুগেদার ইত্যাদিই এই করোনা ভাইরাস নামক গজবের জন্য একমাত্র অন্যতম কারন। [সহিহ ইবনে মাজাহ-৪০১৯]

সুতরাং আমাদের বোধোদয় হওয়া দরকার। সতর্ক হতে হবে, সতর্ক করতে হবে তরুন ও যুবকদের। আল্লাহ রব্বুল আলামীন ক্ষমা করুক, তৌফিক দান করুক।

লেখকঃ গোলাম রব্বাণী রোমান। ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পাঞ্জেরি একাডেমি স্কুল, বাজিতনগর, সাঘাটা, গাইবান্ধা]

আপনার মতামত লিখুন :