তথ্য জালিয়াতি দায়ে গাবতলী শহীদ জিয়া কলেজের সভাপতির লাখ টাকা জরিমানা

SangbadAjKalSangbadAjKal
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  08:53 PM, 06 April 2017

গাবতলী (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ মামলায় তথ্য গোপন ও একই বিষয় নিয়ে দুইবার রিট করায় জালিয়াতির দায়ে বগুড়ার গাবতলী শহীদ জিয়া মডেল কলেজের গভর্নিং বডির অব্যহতিপ্রাপ্ত সভাপতি মোছাঃ মমি আক্তারকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। জরিমানার ওই টাকা ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১৩ এপ্রিলের মধ্যে এই টাকা জমা দিয়ে হলফনামা আকারে রশিদ দেখানোর জন্যও বলেছেন আদালত। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মমি আক্তারের স্বামী সাখাওয়াত হোসেন লিটন, গাবতলী শহীদ জিয়া মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ইউএনও মোঃ মনিরুজ্জামান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জান্নাতুল ফেরদৌসী বেগম।

কলেজের গভর্নিং বডির পদে থাকা না থাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এ সংক্রান্ত পাল্টাপাল্টি আবেদনের শুনানিতে তথ্য গোপন করার বিষয় ধরা পড়ার পর গত ৩এপ্রিল হাইকোটের বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে গাবতলীর ইউএনও’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোঃ গোলাম আক্তার জাকির। ইউএনও’র আইনজীবী সেলিনা আক্তার জানান, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও গাবতলী শহীদ জিয়া মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মোছাঃ মমি আক্তার ২০১৬ সালে অধ্যক্ষ মাহতাব উদ্দিনকে বরখাস্ত করেন। পরে মোঃ নুরুন্নবী পুটুকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ মাহতাব উদ্দিন পরবর্তীতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরিদর্শককে লিখিতভাবে জানিয়ে প্রতিকার চান। বোর্ড থেকে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয় অভিযোগ তদন্ত করার জন্য। তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে আনা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগের সত্যতা পায় বলে প্রতিবেদন দেয়। পরে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড মমি আক্তারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন এবং নোটিশের জবাব দিতে ৭দিনের সময় দিলেও কোনো জবাব দেননি। এর উপর ভিত্তি করে পরে ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গভর্নিং বডির সভাপতি পদ থেকে মোছাঃ মমি আক্তারকে অব্যাহিত দেয়া হয়। সেই সঙ্গে ইউএনওকে ওই কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে ওই নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন মমি আক্তার। গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে ইউএনওকে কেন অবৈধ ঘোষনা করা হবে না তা জানতে সংশিষ্ট হাইকোর্টের বিচারপতি গত জানুয়ারি মাসে রুল জারি করেন। কিন্তু ওই রুলের তথ্য গোপন করে একই বিষয় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি জহিরুল হকের বেঞ্চে আরেকটি রিট করেন মমি আক্তার। দ্বিতীয় রীটের শুনানিতে গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে ইউএনওর নিয়োগ স্থগিত করে তাকে কেন অবৈধ ঘোষনা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন আদালত। ইউএনওকে গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে নিয়োগ স্থগিতের আদেশের কপি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড ও ইউএনওর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তারের কাছেও যায়। এদিকে সোমবার নির্ধারিত দিনে প্রথম রুলের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে ওই বিষয়টি তুলে ধরেন ইউএনওর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার। এতে আদালত মামলায় তথ্য গোপন করে জালিয়াতির দায়ে মমি আক্তারকে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। উপরোক্ত তথ্যাদি নিশ্চিত করেছেন শহীদ জিয়া মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ইউএনও মোঃ মনিরুজ্জামান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জান্নাতুল ফেরদৌসী বেগম।

আপনার মতামত লিখুন :