বুকে চাপা কষ্ঠ নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ

বার্তা বিভাগবার্তা বিভাগ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  07:02 PM, 19 June 2020

শাহাব উদ্দীন (রাফেল) ষ্টাফ রিপোর্টারঃ প্রায় প্রতিদিন রাজধানীতে বাড়ছে গণপরিবহনের সংখ্যা ও তেমনি বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততা। গাড়ি ছুটছে, অফিস খুলছে। করোনার ভয় পাশ কাটিয়ে আপাতদৃষ্টিতে সব স্বাভাবিক মনে হলেও রাতের চিত্র তার উল্টো। স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট বুকে চেপে রাজধানী ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। এতোদিনের চেনা শহর ছেড়ে আবারো ফেলে আসা গ্রামের পানে যাত্রা। পেছনে যে, ভয়, হতাশা আর অনিশ্চয়তা।

অভাবনীয় এক পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। করোনাভাইরাসের বিস্তার এতো দ্রুত গতিতে হবে, বাংলাদেশে অনেকে সেটি ভাবতেই পারেননি।প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।

বাংলাদেশের অনেক লোকই ভেবে ছিল, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখানে হবেনা। কারণ বাংলাদেশের তাপমাত্রা বেশি। অথচ এর তিন মাসের মধ্যেই দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ পুরো সমাজে জেঁকে বসেছে।

নিজের পেশাগত কাজে অনেক সময় মধ্য রাতে বাসায় ফিরেতে হয়। রাত বারোটার সময় ঢাকার কল্যাণপুর ,শ্যামলী সহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক ভিক্ষুক বসে থাকতে দেখা যায়।এমন ঢাকা যেন দেখিনি কখনো। কোথায় যেন একটা শুন্যতা। যে মহল্লায়,আর যে শহরে রাত ১১ টা বাজলে মনে হইতো পাড়ার ছেলে গুলো চা খেতে আসলো ঠিক সন্ধ্যা বেলায়।সেই শহরে শুধুই শুন্যতা আর হাহাকার।

রাতে যখন ট্রাকে করে আসবাবপত্র নিয়ে ছোটাছুটি করছে তখন বুঝা যায় আসলেই সবাই কষ্ঠে দিন পার করছে। বাস স্ট্যান্ডে ব্যাগ বস্তা দেখলেই মনে হয় বিষন্নতা।জিজ্ঞেস করলে অনেকেই বলেন ,অনেক ভালোলাগার একটা শহর যেখানে পার করলাম জীবনের অর্ধেক বয়স.সেই শহরটা ছেড়ে যেতে হচ্ছে কিছু করার নেই। আমাদের এই পৃথিবী আবার সুস্থ হবে এটাই আগামী দিনে সকলের চাওয়া।

আমরা জানি না এইটার শেষ কবে। জীবন আসলে বড়ই কঠিন একটা সমুক্ষে দাঁড় করিয়েছে সবাইকে। তবুও জীবন চলতেই হবে। হতাশা বেড়ে গেলে যে শুধু শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি হয় তা নয়, হতাশা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের মাঝে অপরাধ করার প্রবণতাও বেড়ে যায়। হতাশা বাড়লে তার মধ্যে সহিংস অপরাধ যেমন: হত্যা, মারামারি, রাহাজানি করার প্রবণতা বেড়ে যায়। ইগনাসি মানিও এবং মার্টিন রোসর ‘ফ্রাস্টেশন, ইউফোরিয়া এ্যান্ড ভাওলেন্ট ক্রাইম’ আর্টিকেলে স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় যে, হতাশার সাথে সহিংস অপরাধের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। তাঁরা বলেন যে, হতাশাগ্রস্থ ব্যক্তির যে কোন ধরনের অপরাধ করার প্রবণতা, সুস্থ ব্যক্তির চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।

আমাদের নিজেদেরও মনে রাখতে হবে, করোনাকালের এই সময়টা সাময়িক, এই পরিস্থিতি আমাদের সবার সম্মিলিত চেষ্টায় হয়তো নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে। নিশ্চয়ই আমরা সবাই আবার স্বাভাবিক জীবনে দ্রুত ফিরে আসবো। তাই এ সময়টাতে আতঙ্ক হতাশা ও বিষন্নতার বিপরীতে যতটা সম্ভব ইতিবাচক থেকে পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করতে হবে।

আপনার মতামত লিখুন :