রঙিন মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী গাইবান্ধা মহিমাগঞ্জের আসাদুজ্জামান বিপ্লব

শাহাব উদ্দীন রাফেল, স্টাফ,রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জে রঙিন মাছ চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ‘রঙিন মাছের কারিগর’ আসাদুজ্জামান বিপ্লব । গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জিরাই গ্রামের বিপ্লব প্রথম গোবিন্দগঞ্জ রঙিন মাছের (অ্যাকুয়ারিয়ামের জন্য) চাষ শুরু করেন। গড়ে তোলেন ‘একোয়া ফিস ল্যান্ড’ হ্যাচারি নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।
পরিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে বেশিদূর পড়াশুনা করতে পারেননি আসাদুজ্জামান বিপ্লব । কাজ করতেন ঢাকার বাইপাইল জিরাবো এক গার্মেন্টে ফ্যাক্টারীতে। এক সময় ভালো কাজের জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে বেড়ান।
একটা সময় নিয়মিত ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি শুরু করেন মাথায় ঘোরপাক খায় জীবন কিভাবে চলবে। হতাশ হবার কিছুই নেই, একদিন ইউটিউব এ দেখেন রজ্ঞিন মাছ চাষ কিভাবে করা যায়।তারপর থেকেই সে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নেয় এই মাছ চাষ এর। কিছুদিনের মধ্যে আয়ত্ব করেন রঙিন মাছ উৎপাদনের কলাকৌশল। সেখান থেকে বাড়ীতে ফিরে এসে শুরু করেন রঙিন মাছের চাষ।

৩৩ বছর আসাদুজ্জামান বিপ্লব সংবাদ আজকাল কে জানান-প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আমি হাউজ করি।তারপর ১০
০০০০ টাকা পুজি নিয়ে তার ব্যবসা শুরু করেন। এখন এই ব্যবসা তার ইনভেস্ট প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা।নিজ অভিজ্ঞতায় প্রজননের সময় বিশেষ পদ্ধতিতে ডিমে জিং ব্যবহার করে কিছু মাছের রং বদলে দিতে সক্ষম হন।

শুক্রবার সকালে তার হ্যাচারিতে ঘুরে দেখা গেছে- বাড়ির আজ্ঞিনা বাড়ির উঠানে বেশ কয়েকটি হাউজ করে রঙিন মাছ উৎপাদন করছেন বিপ্লব। এতে তার ছেলে এবং সে নিজে সময় দিচ্ছে। গোল্ড ফিস,কমেট ,নরমাল গোল্ড ফিস,পারস্কেল ,বাবুল আই ,রেন্চু ,রিওক্যান ,রেডক্যাপ ,ওরেণ্ডা ,বাটারফ্লাই,জাপানিকই,সিগ্গাপুরি কৈ কার্প,ইত্যাদি আরো অনেক প্রজাতির মাছ রয়েছে তার হ্যাচারীতে। প্রতিটি মাছ সর্বনিম্ন ১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২০থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
তিনি আরো বলেন-বাংলাদেশে এই রঙিন মাছ চাষ হচ্ছে তিন জায়গায়।বাংলাদেশে প্রথম চাষী সাতক্ষীরা সাইফুল্লাহ গাজী । রঙিন মাছ চাষ করে নিজের স্বপ্নগুলোকে রাঙিয়ে তুলেছেন তিনি। তিনি বলেন- সরকার সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ ও বেকারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো অনেকে এ পেশায় এগিয়ে আসবে। তিনিও এলাকার কয়েকজন যুবককে উৎসাহ দিয়ে রঙ্গিন মাছের চাষ করতে সহযোগিতা করছেন বলে তিনি জানান।

আসাদুজ্জামান বিপ্লব এর বাড়ি মহিমাগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে ৫ মিনিট হাটলেই তার বাসভবন। এক ছেলে এক মেয়ে এবং মাকে নিয়ে তার সংসার ভালোই চলছে।আপনারা চাইলে যে কেউ তার হ্যাচারিতে গিয়ে মাছ কিনে নিয়ে আসতে পারেন।