শিবগঞ্জে দেউলী ইউপি চেয়ারম্যানের ৪ বছরের সাফল্য ও মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ

বার্তা বিভাগবার্তা বিভাগ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:34 PM, 14 May 2020

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ৯নং দেউলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান তার ইউনিয়নের ৪ বছরের সাফল্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেছেন।  এবং সেই সাথে তার বিরুদ্ধে এক ইউপি সদস্য মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করায় তিনি তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪মে) সকাল ১১টায় তিনি তার পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, গত ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনগণের ভোটে ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে জয়ী হওয়ার পর থেকে সুনামের সাথে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যদের নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি।
এদিকে ২০১৫ সালের ইউপি নির্বাচন শুরু থেকে আমার বিপক্ষে অবস্থান নেয় আমারই পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলাম। নির্বাচনে তিনি আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে সমর্থন করে ছিলেন এবং আমার বিরুদ্ধে অনেক অপ্রচার চালিয়ে ছিলেন। তবুও ঠেকাতে পারেনি জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন। তারপরেও আমি ২নং ওয়ার্ড সদস্য ওবাইদুল ইসলামসহ ইউনিয়নের সকল সদস্যকে নিজের পরিবারের মতোই দেখতাম।
কিন্তু ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ নির্বাচনে ওরাইদুল ইসলামের মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী না হওয়ায় সেই থেকে ওবাইদুল পরিষদে আসতে লোজ্জাবোধ করে বলে পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারি। এরপরেও আমি অনেক বার ওবাইদুলকে পরিষদে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। এমনকি সচিবের মাধ্যমে ফোন দিয়েও তাকে পরিষদে ফেরানো যায়নি।
বরং সে আমাদের কথায় কর্ণপাত না করে নির্বাচনের প্রায় ৪ বছর পর এসে আমার প্রতিপক্ষের  সহযোগীদের যোগসাজশে মিথ্যা বানোয়াট ভাবে গত বুধবার (১৩এপ্রিল) পত্রপত্রিকায় ও বেশ কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, গত ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনগনের ভোটে ইউপি সদস্য হিসেবে বিজয়ী হওয়ার কয়েক মাস পরে চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান ইউপি সদস্য ওবাইদুলকে বলেন “তুই আর পরিষদে আসবিনা”।
আরও উল্লেখ করা হয়, তাকে মৌখিক ভাবে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) করা হয়। তিনি বিগত ৪ বছরে ইউপি সদস্য হিসেবে পরিষদে যেতে পারেনি। এর আগে কয়েক দফা পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান তাকে উদ্দেশ্য করে বলে সে তার পরিষদের কেউ না। শুধু তাই নয়, গত ৪ বছরে কোন প্রকার সরকারি বরাদ্দ তার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়নি। তাকে না জানিয়ে জাল স্বাক্ষর করে নিজের ইচ্ছা মতো তার বরাদ্দ চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করে আসছেন।
ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলামের ২নং ওয়ার্ডে বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান জানান, ইউপি সদস্য ওবাইদুল যেসব অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন, তা সম্পন্ন মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। স্বাক্ষর জাল করে তার বরাদ্দ অন্য কেউ উত্তোলণ করার কোন সুযোগ নেই। সে অনুপস্থিত থাকায় পরিষদের প্রত্যেক সদস্যের সিদ্ধান্তে ২নং ওয়ার্ডসহ সমোবন্টন করা হয়েছে। ওবাইদুল পরিষদে না এসেও নিজের বেতন সম্মানী ঠিকই তুলেছেন।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রতি বছর এলজিইডি থেকে যে মোটা অঙ্কের টাকা বরাদ্দ আসে। ওবাইদুল পরিষদে উপস্থিত না থাকা স্বত্ত্বেও সেই বরাদ্দকৃত টাকায় ২নং ওয়ার্ড এলাকার উন্নয়নে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভাট স্থাপনসহ প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা কাজ করা হয়েছে। তার ওর্যাডে ভিজিএফ  ভাতা কার্ডও বন্টন করা হয়েছে।
চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান তার ৪ বছরের সফলতা তুলে ধরে জানান, নির্বাচনের পর থেকে আমার ইউনিয়নে রাস্তাঘাট, ড্রেন নির্মান, গরীব দুঃখীদের, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, কর্মসৃজনশীল, মাদক, সন্ত্রাস,  বাল্যবিবাহ সচেতনাসহ বর্তমান করোনা ভাইরাসে কর্মহীন মানুষদের সরকারের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবেও অসহায় পরিবারে খাদ্য সহায়তা করছি।
সোমবার (১১ মে) দুপুরে চেয়ারম্যানের এসব অভিযোগ সম্পর্কে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে রাতে চেয়ারম্যানের ছেলে সহ ৬/৭ জন ওবাইদুলের বাড়িতে এসে গালি গালাজ ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয় এটাও মিথ্যাচার বলে চেয়ারম্যান বলেন, দেশটা মগেরমুল্লুক নয়। যে একজন ইউপি সদস্যের বাড়ীতে গিয়ে কেউ ধুমকি ধামকি দেওয়ার সাহস পাবে।
আমার ইউনিয়নের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করতে ওবাইদুল আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। আর কয়েক মাসপর ইউপি নির্বাচন তাই ইউনিয়নবাসীর কাছে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
 একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সামনা-সামনি আসতে না পেরে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ ওবাইদুলকে লেলিয়ে ছেপেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শিবগঞ্জ থানায় চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সচিব জহুরুল ইসলাম, উদ্যোক্তা নাসির উদ্দিন,  সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আক্তার জাহান শ্যামলী, সাবিনা ইয়াসমিন, রেহেনা পারভিন রিনা, ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান (খোকন), মেহেদুল ইসলাম, ছামছুল ইসলাম, দোলন রহমান, মেহেরুল ইসলাম, জাবেদ আলী প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুন :