সোনাতলায় হেয়ালিপনায় চলছে এলায়েত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমঃ দেখার কেউ নেই

SangbadAjKalSangbadAjKal
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  07:44 PM, 21 May 2019

সংবাদ আজকাল ডেক্সঃ
বগুড়া সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের ভেলুরপাড়ায় অবস্থিত এক সময়ের সুনাম ধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এনায়েত আলী উচ্চ বিদ্যালয় এখন চলছে হেয়ালিপনায়, বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ব্যবস্থা একে বারেই লাজুক। গত এসএসসি পরিক্ষায় ওই বিদ্যালয়ের কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরিক্ষার্থী মাত্র ছয় জন। রিতিমত সব গুলো বিষয়ে পরিক্ষা দিয়েও রেজাল্ট না হওয়ায় ভেঙ্গে পড়েন ছাত্র/ছাত্রীরা। অভ্যন্তরে খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন, তাদের বাস্তব পরিক্ষার যে মার্ক সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের দেওয়ার কথা তা দেওয়া হয়নি। ফলে তাদের পরীক্ষার রেজাল্ট আসেনি। এ নিয়ে পরীক্ষার্থী অভিভাবক বৃন্দ। ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে শিপন জানান, পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলে ছাত্র-ছাত্রীদের রেজাল্ট না আসায় তারা আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। আমরা ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিষয়টি স্কুলে আলোচনা করে জানতে পারি, বাস্তব প্রশিক্ষন পরীক্ষার মার্ক যথা সময়ে সংশ্লিষ্ট বোর্ডে না পাঠানোই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এর পিছুনে কী কারন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির এ সদস্য জানান, শিক্ষকদের গাফিলতির কারনে আজ ছয়টি ছাত্রদের এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হলেও পরীক্ষা বিষয়ে অবগত নই। এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমেন এর সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, আমি শারিরিক অসুস্থ্যতার কারনে ছুটিতে রয়েছি। দায়িত্ব ছিলো ওই স্কুলের মৌলবি শিক্ষক আনোয়ারের উপর।
বিদ্যালয়ের মৌলবি শিক্ষক আনোয়ারের সাথে কথা বলতে চাইলে প্রথমে তিনি কথা বলতে অস্বীকার করলেও পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি সাধারন একজন শিক্ষক এমন কোনো দায়িত্ব আমার ছিলো না। উৎসুক হয়ে তিনি সাংবাদিকদের আরোও জানান, বিদ্যালয়টির কারিগরী শিক্ষা ব্যাবস্থায় নেই ট্রেড বিষয়ে কোনো শিক্ষক। আমরা সাধারন শিক্ষকরা অন্যন্য বিষয়ে ক্লাস নিয়ে থাকি। বাস্তব প্রশিক্ষনের নেই কোনো ব্যবস্থা। প্রধান শিক্ষকের কথা অনুযায়ী তার দায়িত্ব ছিলো কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন “মুখের কথায় তো সব হয় না, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া ছিলো তার কোনো অফিসিয়াল পেপার্র্স নেই। বরং রেজাল্টের এমন অবস্থায় প্রধান শিক্ষকের অনুরোধে আমি পরবর্তীতে বাস্তব প্রশিক্ষনের নাম্বার নিয়ে ঢাকা কন্ট্রলার সাহেবের কাছে গেলে উনি বকা-ঝকা দিয়ে আমাকে বাড়ী চলে যেতে বলেন। এর বেশি আমি আর কিছু জানি না।”
বিদ্যালয়টির সহকারী প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক এর কাছে ছাত্র/ছাত্রীদের জীবন নিয়ে এমন খেলা কেনো হলো এমন প্রশ্নে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ সকল দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের। এ সময় প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমেন ছুটিতে ছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময় তিনি দায়িত্বরত ছিলেন। কাজেই আপনাদের আপনাদের কিছু জানার থাকলে প্রধান শিক্ষকের কাছে থেকে শুনুন। ছাত্র/ছাত্রীদের বাস্তব প্রশিক্ষন নাম্বার কেনো দেওয়া হলো না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমেন নিজে এ বিষয় গুলো দেখতেন। আমার জানা মতে তিনি বয়রা স্কুলের এক শিক্ষকে বাস্তব প্রশিক্ষন এর নাম্বার দেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে ছিলেন। তার পরেও এমন কেনো হলো আমি জানি না।
বিদ্যালয়েটির শিক্ষকদের এমন দায়িত্বহীনতার বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজার রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এ ধরনের কোনো কিছু তিনি জানেন না। সাথে সাথে অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ডেকে এনায়েত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরী শাখার রেজাল্টশীট দেখতে চাইলে কর্তব্যরত কর্মকর্তা জানান, সব বিদ্যালয়ের পরীক্ষার রেজাল্টশীট জমা হলেও ওই বিদ্যালয়ের রেজাল্টশীট জমা হয়নি। সংঙ্গে সংঙ্গে শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষক এমদাদুল হককে ফোন দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সাংবাদিকদের জানান, আপনাদের কে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। তদন্ত করে এর পিছনের কারন বের করে দায়িত্বরত বিদ্যালয়টির শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমেন বিভিন্ন মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ রিপোর্টটি না করার অনুরোধ জানান ও তিনি আরও বলেন আমি অসুস্থ্য তার পরেও ছাত্রদের রেজাল্ট নিয়ে আসার জন্য ঢাকায় লোক পাঠিয়েছি। আশা করছি বোর্ড কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের কথা বিবেচনা করে রেজাল্ট মার্ক দিবেন।

আপনার মতামত লিখুন :