রাতে ঘুম না আসার কারণ

বার্তা বিভাগবার্তা বিভাগ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:23 PM, 06 August 2021

প্রায় প্রতিদিন রাতে ঘুম না হলে সকালে চোখ খোলার পর থেকে ক্লান্তি ভর করে শরীরে। সারাদিন ঝিমায় শরীর। আর দ্রুত ওজন বেড়ে যাবার জন্য এটি অনেক বড় একটি কারণ। অনেকে একে ইনসমনিয়া বলে থাকেন। আসলে ঘুম ঠিকমতো না হলে তাকেই আমরা অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া বলি। ল্যাটিন শব্দ ‘সমনাস’-এর অর্থ ‘স্লিপ’ বা ঘুম। আর ‘ইন’-এর অর্থ ‘নট’ বা না। এই দুই মিলিয়ে ‘ইনসমনিয়া’ শব্দটি এসেছে।

বিজ্ঞানীরা বলেন, সুনিদ্রা যাতে হয়, এরও উপায় আছে। স্লিপ হাইজিন বা নিদ্রাবিধি। মন ও শরীরকে শান্ত, সতেজ ও সবল রাখে। আছে কিছু পরামর্শ, যেগুলো মানতে পারলে সুনিদ্রা হবে। কী করলে ঘুম আসবে?

ঘুম ঘুম না এলে বিছানায় শুতে যাওয়া ঠিক নয়। ঘুম না এলে এমন কিছু করতে হয়, যাতে মন শিথিল হয়। পড়ুন একটি হালকা ধরনের বই, শুনতে পারেন নরম সুরের গান। এতে শরীর শিথিল হবে, মন যাবে অন্য কোথাও।

২০ মিনিট পর্যন্ত ঘুম আসছে না? তাহলে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়া ভালো। এমন কিছু খুঁজে নিতে হবে, যা করলে মন শিথিল হয়। বিরক্তি বা রেশ কেটে না গেলে ঘুমাতে যাবেন না।

ঘুমানোর আগে টিভি দেখা, অফিসের কাজ করা—এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। শোবার ঘরে মৃদু আলো, তাজা ফুল রাখতে পারেন।

শোবার ঘর হবে শান্ত, অন্ধকার কিন্তু শীতল। যেন গুহার মধ্যে শয়ন। বাদুড়ের মতো ঘুম। বাদুড় ঘুমায় ১৬ ঘণ্টা। গুহার সাপ শীতলতায় থাকে বলেই এত নিদ্রা।

চেষ্টা করবেন একই সময়ে শুয়ে পড়তে। আবার একই সময়ে ঘুম থেকে উঠে পড়বেন। ছুটির দিনগুলোতেও এই নিয়ম মেনে চলবেন।

ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে গোসল করলে সতেজ লাগবে।

দিনের বেলা না ঘুমানোই ভালো। ঘুমালেও বিকেল তিনটার পর ২০ মিনিটের বেশি ঘুমাবেন না।

জীবনযাপনের সব ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চললে দেখবেন ঘুম চলে আসছে।

শোবার বিছানায় পড়া, টিভি দেখা, লেখা, ফোনে কথা বলা নয়।

দুপুরে খাবারের পর থেকে ক্যাফেইন-জাতীয় ও পানীয় নয়। অর্থাৎ চা-কফি, চকলেট নয়।

ধূমপান ও অ্যালকোহল বাদ দিতে হবে।

খিদেপেটে শুতে যাবেন না, আবার ভরপেটেও যাবেন না শুতে।

নিয়মিত ব্যায়ামে ঘুম আনে। দিনে আধঘণ্টা ব্যায়াম যথেষ্ট। দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা। শুতে যাওয়ার আগে আগে ব্যায়াম নয়। ব্যায়াম দিনের প্রথম দিকে বা বিকেলে।

দিনে যত পারেন দিনের আলো লাগাবেন শরীরে, আলো যেন ঢোকে বাসগৃহে, অফিসঘরে।

এলকোহল পান না করা :
এলকোহল পান করবেন না। যদিও এলকোহল আপনাকে দ্রুত ঘুম পাড়িয়ে দেয় কিন্তু এটি ঘুমের মধ্যে রেপিড আই মুভমেন্ট ঘটায়। তাই আপনি যখন ঘুম থেকে জাগেন ফ্রেশ লাগার পরিবর্তে ক্লান্ত থাকেন।

খুব বেশী চিন্তা করা না করা :
আমরা আমাদের ব্রেইন কে প্রতিদিনের হাজারো সমস্যা থেকে নিস্তার দেইনা ঘুমানোর আগে। বিছানায় শুয়ে শুয়েও ব্রেইন কাজ করতে থাকে নানান জটিলতা নিয়ে। যা ভাল ঘুমের সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয়।

তাই নিজেকে সরিয়ে আনুন দৈনন্দিন এসব চিন্তা থেকে ঘুমানোর আগে। অন্যকিছু করুন যা আপনার পুরো মনোযোগ নিয়ে নেয়। যেমন একই শব্দ দিয়ে শুরু এমন দেশের নাম মনে করা অথবা মনে মনে ভেড়া গুনুন।

নিয়মিত একই টাইমে ঘুমের অভ্যাস করা :
আপনার দেহ ঘড়িকে একটা ছন্দে নিয়ে আসুন। শুধুমাত্র অভ্যাসের কারণে আপনি একটা ভালো ঘুম থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। যার ফলে পরদিন সকালেও আপনার ঘুম ঘুম ভাব থেকে যায়। নিজের শরীরকে ট্রেইন করুন নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ব্যাপারে রেসপন্স করতে। ঘুমানোর আগে হাল্কা উষ্ণ পানিতে গোসল করুন। অবশ্যই গরম পানিতে না। হিতে বিপরীত হতে পারে।

স্লিপিং পজিশান ঠিক রাখা :
আপনি কোন পজিশনে ঘুমান তা আপনার ঘুম হবার পরিমান নির্ধারণ করে। আপনি একা ঘুমান বা পার্টনারের সাথে, আপনার শরীর যদি স্ট্রেসে থাকে ভালো ঘুম হবেনা।এমন একটা পজিশনে ঘুমান জেটায় আপনি সবচেয়ে বেশী কমফোর্টেবল। এবং ঘুম আসার আগ পর্যন্ত তা পরিবর্তন না করার চেষ্টা করবেন।

আপনার মতামত লিখুন :