উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বৃহত্তম পূন্ড্রনগরীর মহাস্থানহাটে শীতের আগাম সবজির বাজার জমজমাট

SangbadAjKalSangbadAjKal
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:51 PM, 17 October 2019

নুরনবী রহমান শিবগঞ্জ (বগুড়া)  উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বারখ্যাত বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানহাট উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম সবজির হাট। বর্তমানে প্রতিদিনই পাইকারি এ হাট বসে। বগুড়ার সদর, শিবগঞ্জ, সোনাতলা, গাবতলী, কাহালু,ক্ষেতলাল ও কালাইসহ বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকগণ তাদের উৎপাদিত ফসলনিয়ে হাজির হন এই ইতিহাস সমৃদ্ধ পূন্ড্রনগরীর মহাস্থানসবজির হাটে। ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বেচা-কেনা করার জন্য প্রচন্ডভীঁড় জমে প্রতিদিন। কৃষি-নির্ভর এ অঞ্চলের মানুষ ভ্যান, ভটভটি, অটো, সিএনজি ও বিভিন্ন মাধ্যমে মহাস্থানহাটে সবজি আমদানি করে থাকেন।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারি ক্রেতাগণ ব্যবসার জন্য আসেন করতোয়া নদীর তীরে এই হাটে।বিশ্বরোড সংলগ্ন হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের প্রসিদ্ধ সববাজারগুলোতে খুব সহজেই পৌঁছানো যায় মহাস্থানের সবজি। শক্তিশালী ম্যানেজিং কমিটি দ্বারা পরিচালিত ঐতিহাসিক মহাস্থানহাটের সূদৃঢ় মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে লেনদেন ঝুঁকিমুক্ত হওয়ায় সারাবছর এখানে পাইকারি ব্যবসায়ীদে সমাগম থাকে। হাটইজারাদার সফিকুল ইসলাম সফি প্রতিবেদক নুরননী রহমান কে জানান, প্রতিদিন এখানে প্রায় ৩০ থেকে ৪০লক্ষ টাকার সবজি ক্রয়-বিক্রয় হয়।

যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এখানে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সমাগম ঘটে প্রচুর। সবজির হাটে সরেজমিনে দেখা যায় বিচিত্র ধরণের শীতের সবজির সমারোহ। পাইকারি হিসেবে ফুলকপি-১২০০-১৬০০টাকা মন, বাঁধাকপি ৬০০-৭০০টাকা ১০০পিছ, শিম-৩৫০০-৩৭০০টাকা মন, করোলা-১৪০০-১৬০০টাকা মন, কচু-১৮০০-২০০০টাকা মন, পাতা পিঁয়াজ-১৮০০-২০০০টাকা মন, মুলা-৮০০-১০০০টাকা মন, বেগুন-১০০০-১৪০০টাকা মন, ঝিঙে-১০০০-১২০০টাকা মন, পটল-৮০০- ১২০০টাকা মন, সবুজ লাউ-২৫০০-৩০০০টাকা ১০০পিছ এবং কাঁচা মরিচ-১৯০০-২০০০টাকা মন দামে বিক্রি করছেন কৃষকরা। বিষ্ণুপুর, শিবগঞ্জ, বগুড়ার কৃষক শফিকুল ইসলাম বাজারে নিয়ে এসেছেন বাঁধাকপি।

দীর্ঘ সময় বর্ষা লেগে থাকায় তাদের ফসল ভালো হয়নি, ফলে বাঁধাকপিগুলোর চেহারা অত্যন্ত গুনগÍ হওয়ায় বাজারে ভালো দাম পাচ্ছেন না তিনি। প্রতি বিঘা বাঁধাকপি আবাদে তার খরচ হয়েছে ১৫-২০হাজার টাকা। কিন্তু তিনি তার ফসল বিক্রি করতে পারবেন মাত্র ৮-১০হাজার টাকা। নুরুল ইসলাম দেড় বিঘা জমিতে খরচ করেছেন প্রায় ৪০-৪৫হাজার টাকা। ফসল খুব নিম্নমানের হওয়ায় তার প্রায় ২০-২৫হাজার টাকার ক্ষতি হবে। এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা এবারে আর সম্ভব নয়। ফুলকপির চেহারাও কঙ্কালসার হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কৃষকের মুখের সেই স্ফীত হাসিটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। অবশ্য অন্যান্য ফসলের চাষীদের মুখের হাসির জৌলুসই বলে দিচ্ছে তাদের সফলতার খবর।

মুসলিমগঞ্জ, কালাই, জয়পুরহাটের কৃষক এনামুল হোসেন একগাল হেসে জানালেন, তার সবুজ লাউ এবার দারুন তেজ দেখাচ্ছে। প্রতি বিঘা লাউ চাষে তার খরচ ১০-১২হাজার টাকা। ইতোমধ্যেই শুরুতেই বাজার থেকে তিনি তুলে নিয়েছেন ২১হাজার টাকা। এক বিঘা লাউ চাষে প্রায় ২লক্ষ ২০হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান। এছাড়াও করোলা, কাঁচা মরিচ, বেগুন, মুলা ইত্যাদির বাম্পার ফলন এবার কৃষকের মুখের হাসি ও আনন্দ অনেকটা বেড়ে দিবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন :