রুহিয়াএ বাসর ঘরে বরের মৃত্যু – জীবিত করতে চলে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী ঝাঁড়ফুক
আব্দুল কাদের জিলানী রুহিয়া, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ।। ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানার ২১নং ঢোলার হাট ইউনিয়ন এর আরাজি দক্ষিণ বঠিনা এলাকায় বাসর ঘরে প্রদীপ কুমার বর্মন (২০) নামে এক বরের মৃত্যু হয়েছে। বিশহরী দেবীকে সন্তুষ্ট করা গেলে নাকি বর প্রাণ ফিরে পাবে এই বিশ্বাসে চলছিল ঝাঁড়ফুক।
এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় বরের বাড়িতে জমে উঠেছে হাজারও মানুষের ভিড় ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (১৩ জুলাই) রাতে সদর উপজেলার আরাজি দণি বঠিনা গ্রামের বিনয় চন্দ্র রায়ের ছেলে প্রদীপ চন্দ্র রায় (২০) ও একই ইউনিয়ন এর পাশের ছুট খড়িবাড়ি গ্রামের সন্তোষ চন্দ্র বর্মনের মেয়ে প্রতীমা রানীকে (১৮) ধর্মীয় রীতি নিয়মে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে।
বৃহ¯পতিবার (১৪ জুলাই) সারাদিন বৌভাত শেষে রাতে বর ও কনে বাসর ঘরে যায়।
শুক্রবার সকালে অনেক বেলা হয়ে গেলেও বর(প্রদীপ কুমার বর্মণ) ঘুম থেকে না ওঠায় বাড়ির লোকজন তাকে ডাকাডাকি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় প্রদীপ চন্দ্র রায়কে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর লাশ বাড়ি নিয়ে ফিরলে পরিবারের লোকজন প্রদীপের মৃত্যুকে, না মেনে সেটা বিশহরী দেবীর কাজ ভেবে তাকে পুনরায় বাঁচিয়ে তুলতে পুজা অর্চনা ও ঝাঁড়ফুক শুরু করে। আর কবিরাজ এও বলেন যে তার প্রাণ বিকেল ৪ টার মধ্যে ফিরিয়া আনবো। শুধু তাই নয়, পরিবারের লোকজন লাশের হাতে পায়ে তেল মালিশ চালাতে থাকে।
আর কনে প্রতীমা রাণী স্বামীর প্রাণ ফিরে পেতে লাশের পাশে বসে মা কালির কাছে স্বামীর প্রাণ ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে চলছিল। কিন্তু ঝাড়ফুঁকেও ফেরেনি মৃতের প্রাণ।
শেষে জানা যায় সন্ধ্যা ৬ টার দিকে তার শেষ সমাধি করা হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় আশে পাশের হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সীমান্ত কুমার বর্মন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।