চিরিরবন্দরে কর্মকারদের দম ফেলার ফুরসত নেই

SangbadAjKalSangbadAjKal
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  05:34 PM, 11 September 2016

মো. মিজানুর রহমান (মিজান), চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: আর ক’দিন পরই ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা মানেই কোরবানির ঈদ। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে কর্মকাররা চাপাতি, দা, ছুরি, বটি, তৈরিতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। পশু কোরবানি ও মাংস তৈরিতে অতি প্রয়োজনীয় এসব ধারালো অস্ত্রের চাহিদা মতো সরবরাহের জন্য কামাররা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানির সময়টাতে কামারদের কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় তাদের আয় রোজগারও।

কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কামারদের প্রয়োজনীয় কয়লার দাম বেড়ে গেছে। বেড়েছে লোহার দামও। সে তুলনায় কামারদের মজুরি বাড়েনি। ফলে কামার স¤প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে পৈত্রিক পেশা পরিবর্তন করছে। উপজেলার নশরতপুর, সাতনালা, তেঁতুলিয়াসহ ১২টি ইউনিয়নে অন্তত ৫শতাধিক কামার পরিবারের বসবাস। আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে তাদের পেশায় এসেছে দারুণ ব্যস্ততা। তাদের ভাতির ফুসফাঁস আর হাতুড়ির ঠুকঠাক, টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারশালাগুলো।

কর্মকার প্রদীপ চন্দ্র রায় জানান, যন্ত্রপাতি তৈরির কাঁচামাল কিনতে হয় প্রতিকেজি লোহাভেদে ৬০-১২০টাকায়। পাকা লোহার দা, ছুরি, চাপাতি, বটি সর্বদাই বেশি দামে বিক্রি হয়ে থাকে। দা আকৃতি ও লোহাভেদে প্রতিকেজি ৩০০, ছুরি ৭০০, কাটারী ৩০-৫০ এবং হাড় কোপানোর চাপাতি একেকটি ২৫০টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পুরনো দা, বটি, চাপাতি শান দিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। তবে এখনো তেমন একটা ভিড় চমে ওঠেনি। ঈদের দু’দিন আগে ব্যাপক ভিড় হবে কামারশালাগুলোতে।

কারিগররা জানান, এ পেশায় পরিশ্রমের চেয়ে মুনাফা অনেক কম। দিন-রাত সারাক্ষণ আগুনের পাশে বসে কাজ করতে হয়। তারপরেও গ্রাহকদের চাহিদা পুরণে দিন-রাত একাকার করে কাজ করে চলেছি। কামার স¤প্রদায়ের কারিগরদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। কিন্তু তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। কামার শিল্পের অতিপ্রয়োজনীয় কয়লা, লোহা এবং ফাইলের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। অথচ তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম আগের মতোই রয়েছে। কোরবানির ঈদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অর্ডার আসা শুরু হয়েছে। একারণে তাদের ব্যস্ততাও বেড়ে গেছে। তিনি আরো জানান, কাজের চাপ বেশি থাকলেও বিদ্যুতের সমস্যার কারণে ঠিক সময়ে কাজ করা যাচ্ছে না। এছাড়া যন্ত্রপাতি তৈরির জ্বালানি কয়লার দাম বাড়তি।

কামারদের অনেকে জানান, তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হলেও তাদের পৈত্রিক পেশাকে এখনো বুকে আঁকড়ে ধরে আছেন। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্পকে টেকসই করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

আপনার মতামত লিখুন :