দিনাজপুরে জাল দলিল তৈরির সরঞ্জামসহ আটক ৩

SangbadAjKalSangbadAjKal
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  06:22 PM, 01 July 2016

এম এ হক দিনাজপুর প্রতিনিধি । জেলার ফুলবাড়ীতে জাল দলিল, জাল খারিজ পর্চা তৈরির বিপুল সরঞ্জামসহ ৩ জাল দলিল প্রস্তুতকারিকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধায় পৌরশহরের পূর্ব গৌরীপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, গৌরীপাড়া থানাপাড়া গ্রামের মৃত সুলতানুল আলম’র ছেলে ফুলবাড়ী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সোহবার হোসেন সুজন (৪০), শ্রীহরিপুর গ্রামের সোলায়মান আলীর ছেলে দলিল লেখক আব্দুল জলিল (৪৫) ও তাদের সহযোগী গৌরীপাড়া থানাপাড়া গ্রামের এনামুল হকের ছেলে নাজির ইসলাম (২৮)।

এ ব্যাপারে ওইদিন রাতেই ফুলবাড়ী থানার এস আই আক্কেল আলী বাদী হয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধে ২৫এর ক ধারায় আটককৃতসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মকছেদ আলী জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এহতেশাম রেজার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পূর্ব গৌরীপাড়া সুজন কম্পিউটার দোকানে অভিযান চালিয়ে জাল দলিল প্রস্তুত করার সময় ৫০ টি অধিক পাকিস্তানি স্ট্যাম্প, ১০টি জাল দলিল, জাল খারিজ পর্চা, খাজনার জাল রশিদপত্র, খাজনার ফি আদায়ের জাল ডিসিআর ফরমসহ দেড় শতাধিক বিভিন্ন ভুমি কর্মকর্তার নামের সীল ও সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের সীল জব্দ করা হয়। এ সময় জাল দলিল প্রস্তুত করার অপরাধে ৩ জনকে আটক করা হয়।

ফুলবাড়ী সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় খানসেনারা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে অগ্নিসংযোগ করায় ওই সময়ের সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে থাকা ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত রেজিষ্ট্রিকৃত দলিলের ভলিউম পুড়ে যায়। এ কারণে ওই সময়ের রেজিষ্ট্রিকৃত দলিলের ভলিউম সংরক্ষন না থাকায় ফুলবাড়ী সাবরেজিষ্টি অফিসে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দির্ঘদীন থেকে পাকিস্তানি স্ট্যাম্প’র উপর জাল দলিল তৈরি করে আসছিল। একই সাথে সহকারি কমিশনার ভুমির সীল, স্বাক্ষর জাল করে জাল খারিজ পর্চা, জাল ডিসিআর তৈরি করে দীর্ঘদিন থেকে জমি রেজিষ্ট্রির কাজ করে আসছিল। এ কারণে ফুলবাড়ীতে অধিকাংশ জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

ফুলবাড়ী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মহসিন মৃধা জানান, জমির মালিকানা নিয়ে চলমান মিসকেসগুলো অধিকাংশ দলিল ১৯৬৪ সাল থেকে ৭০ সালের সময়ের। একই সময়ের একই তারিখে একই নাম্বারের দলিল প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। এ সব দলিল সবই পরবর্তীতে তৈরি করা। এ কারণে এই উপজেলায় দিন দিন জমির মালিকানা নিয়ে মামলা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সহকারি সেটেল্টমেন্ট অফিসার আফসার আলী জানান, ২০০১ সাল থেকে এই উপজেলায় সেটেলমেন্টের কাজ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত শেষ করা যাচ্ছেনা মালিকানা জটিলতায়। ১৯৬৪ সাল থেকে ৭০ সাল পর্যন্ত ভলিউম পোড়া থাকায় ওই সময়ের দলিল নিয়ে একই জমির একাধিক ব্যক্তি মালিকানা দাবি করছে। ফলে সেটেলমেন্টের আপত্তি কেস শেষ হচ্ছেনা।

আপনার মতামত লিখুন :