শীতকালে হার্ট অ্যাটাক

বার্তা বিভাগবার্তা বিভাগ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  10:47 AM, 07 December 2019

সংবাদ আজকাল,ডেক্সঃ-কিভাবে হার্ট অ্যাটাক শীতকালের সাথেসম্পর্কযুক্ত?যদিও বাংলাদেশের শীতকালইউরোপিয়ান দেশগুলির মত প্রকট নয়কিন্তু তবুও শীতের এই সময়েহৃদরোগজনিত জটিলতার কারণে মৃত্যুর হার অনেক বেশি দেখা যায়। শীতকালীন হৃদরোগ সংক্রান্ত জটিলতা আরও বাড়িয়ে দেয় রক্তচাপ, কোলেস্টেরলজনিত কারন।এমনকি আপনার কোমরের পরিধিও আপনার হৃদরোগের কারন হতে পারে,এমনটাই দাবি সুইজারল্যান্ড -এর ইনস্টিটিউট অভ সোশ্যাল এন্ড প্রিভেন্টিভমেডিসিনের।

এক্ষেত্রে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে শুধু বিরিয়ানি খাওয়াকেই দায়ী করাটা ঠিক নয়।ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় শরীরের রক্তবাহী নালীগুলি সরু হয়ে যায়। এর পরিনতি হয় উচ্চরক্তচাপ। তাছাড়া সরু রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তনালী বদ্ধ হয়ে যায়; ফলেরক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। যার ফলে হৃদরোগজনিত জটিলতাএবং হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। যদি হার্টের ভেতরকার রক্তনালী বদ্ধহয়ে যায় তাহলে হার্ট অ্যাটাক এবং যদি মস্তিষ্কের রক্তনালী বদ্ধ হয়ে যায় তাহলেস্ট্রোক হতে পারে।

শীতকালে হরমোনের লেভেলেও তারতম্য আসে। যেহেতু শীতকালে দিনরাত্রিরপার্থক্য বেড়ে যায়, সেই অনুযায়ী করটিসল নামক হরমোন নিঃসরণেরও তারতম্যঘটে। এটিও শীতকালীন হার্ট অ্যাটাকের একটি অন্যতম কারণ।

সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন যারা
গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের বয়স ৭৫ থেকে ৮০ তাদেরই শীতের সময়ে হার্টঅ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে সবথেকে বেশি। শিশু এবং বয়োজ্যোষ্ঠ মানুষ যাদেরহৃদরোগজনিত সমস্যা রয়েছে তারাও এই সময়ে সর্বোচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

শীতকালীন হৃদরোগ প্রতিরোধের উপায়
– সবসময় গরম জামাকাপড় পরে থাকুন। আমাদের শরীর সবসময় পরিবেশের সাথেমিলিয়ে একই তাপমাত্রা বজায় রাখতে চায়, যার ফলে শীতকালে হার্টের উপর চাপ বেড়ে যায় এবং রক্তনালী সরু হওয়ার কারণে হৃৎপিণ্ডকে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ করতে আরও বেগ পেতে হয়। তাই সবসময় গরম কাপড় পরে থাকার অভ্যাসকরুন।

– জ্বর, সর্দি আপনার হৃৎপিণ্ডের উপর চাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই অবশ্যই ইনফ্লুয়েঞ্জাভ্যাকসিন গ্রহন করুন।

– যদি পূর্বে হৃদরোগের কোন ইতিহাস থেকে থাকে, তাহলে অতিরিক্ত শারীরিকপরিশ্রম, মানসিক চাপ এবং হঠাৎ রেগে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

– অ্যালকোহল এবং অতিরিক্ত লবন গ্রহন থেকে বিরত থাকুন। অ্যালকোহল হার্টেরছন্দে পরিবর্তন করে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।

– ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন। যদিও এখন বার বি কিউ এবং বন ফায়ারের সময় তবুওআপনার বয়স ৪৫ এর উপর হলে ধোঁয়া যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।

– কখনোই ডাক্তারের সাথে দেখা করা নিয়ে গড়িমসি করা উচিৎ নয়। শরীর খারাপমনে হলেই দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ।

– সবসময় আপনার খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রনে রাখুন। বিয়ের দাওয়াতে যাওয়ার আগেএক বাটি ওট বা ব্রাউন ব্রেডের তৈরি স্যান্ডউইচ খেয়ে নিন। এতে দাওয়াতে গিয়েআপনি বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারবেন।

– সিগারেট এবং ক্যাফেইনজাতীয় পানীয় পান থেকে বিরত থাকুন। এসব বস্তুহৃৎপিণ্ডের কার্যকলাপে বাধা সৃষ্টি করে।

– যেকোনো শারীরিক পরিশ্রম বা ভারী জিনিস উত্তোলন ইত্যাদি কাজ ধীরে ধীরেশুরু করা উচিৎ। বছরের শুরুতে জীম শুরু করতে চাইলে প্রথম কয়েক মাস হালকাএবং কম পরিশ্রমের ব্যায়াম করুন।

-গরমকালে ব্যয়াম শুরু করতে পারেন এবং শীতকালে ব্যয়াম হঠাৎ ছেড়ে না দিয়েব্যয়ামের পরিমান কিছুটা কমিয়ে আনতে পারেন।

-ভিটামিন ডি – এর অভাবে রক্তনালী শক্ত হয়ে যেতে পারে। এটিও হার্ট অ্যাটাকেরকারণ হতে পারে। তাই সবসময় ডাক্তারের পরামর্শে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডিট্যাবলেট সেবন করুন বা প্রচুর ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন – কড লিভারঅয়েল, মাছ, মাংস, ডিম এবং মাশরুম খান।

– আপনার ডায়াবেটিস থাকলে, ইনসুলিনের ডোজ এমনভাবে নিন যেন তা আপনারশরীরের সাথে খাপ খায়। তাই নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ লেভেল পরিমাপ করুন।

আপনার মতামত লিখুন :