সোমবার ঈদুল ফিতর

বার্তা বিভাগবার্তা বিভাগ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:27 PM, 23 May 2020

শাহাব উদ্দিন (রাফেল) স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ শনিবার এক আনন্দময় অনিশ্চয়তার দিন। এই অনিশ্চয়তা চিরন্তন। প্রতি রমজান মাসের ২৯ তারিখ সন্ধ্যায় অগণিত লোক উৎসুক নয়নে পশ্চিম আকাশে খুঁজে এক ফালি বাঁকা চাঁদ। অনেক সময়ই আকাশে মেঘ থাকে, কখনো নির্মেঘ পরিষ্কার। কিন্তু সহজে তার দেখা মেলে! ঈদের চাঁদ বলে কথা।

দেখা গেলে তো খুশির তুফান বয়ে যায় অন্তরে, পাড়া-মহল্লায়, সারা দেশে। সরকারি ঘোষণার সঙ্গে রেডিও-টিভিতে বাজতে থাকে কবি নজরুলের সেই অতুলনীয় গান ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ’। সেই সুরটি কান থেকে প্রাণে আনন্দের অমিয়ধারা হয়ে বয়ে যায়। মনে হয়, হ্যাঁ, দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ এল।

আজ শনিবারও পুনরাবৃত্তি ঘটবে এই চিরাচরিত রীতির। এখন উন্নত প্রযুক্তির যুগ। তাই শুধু চোখের দৃষ্টিশক্তির ওপরই নির্ভর করে থাকতে হবে না। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি শাওয়াল মাসের চাঁদ খুঁজতে ব্যবহার করে প্রযুক্তির সুবিধা। তবে সাধারণ মানুষ অবশ্য খালি চোখেই চেষ্টা চালিয়ে যায় ঈদের চাঁদ দেখার।

সে দর্শনে আনন্দ যেমন আছে, আছে পুণ্যও। কিন্তু তা মিলবে কেবল চাঁদ উঠলেই। ঈদুল ফিতর হবে সোমবার। সে ক্ষেত্রে রোজা পূর্ণ হবে ৩০টি। আগামী সোমবার উদ্যাপিত হবে ঈদুল ফিতর।

গত এক মাস দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ সুবেহ সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারে বিরত থেকে সিয়াম সাধনা করেছেন। আত্মসংযমের মধ্য দিয়ে খোদাভীতি অর্জন এবং পাপ থেকে পরিত্রাণের আশায় দিনে রোজা রাখার পাশাপাশি কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার, তসবিহ-তাহলিল, নফল ইবাদত ও দান-খয়রাত করেছেন সাধ্যমতো।এর পাশাপাশি ছিল রোজার শেষে ঈদের আনন্দ উদ্যাপনের প্রস্তুতি।

পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক-আশাক কেনাকাটা। কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার জন্য টিকিট সংগ্রহ, যাত্রার উদ্যোগ—এসবের আনন্দও কম নয়। ঈদের দিনটি ধনী-গরিব, আশরাফ-আতরাফনির্বিশেষে সবাইকে এককাতারে দাঁড় করায়। এদিক থেকে ঈদ কেবল আনন্দের বার্তাই নিয়ে আসে না, ইসলামের সাম্যের এক বড় পরিচয় উদ্ভাসিত হয় এই ঈদে।

চাঁদ দেখা গেলে ঘরে ঘরে শুরু হয় সাধ্যমতো উপাদেয় খাবারের আয়োজনের তোড়জোড়। ‘সেমাইয়ের ঈদ’ নামে প্রচলিত এই ঈদে নানা রকম সেমাইয়ের সঙ্গে থাকবে ফিরনি, পিঠা, পায়েস, পোলাও, কোরমাসহ সুস্বাদু খাবারের আয়োজন। বিশেষ আয়োজন থেকে বাদ যাবে না রোগী, বন্দী বা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত কর্মীরাও। রোগীদের জন্য হাসপাতালে, এতিমদের জন্য এতিমখানায় ও বন্দীদের জন্য কারাগারগুলোতে উন্নত মানের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে প্রথাগতভাবে। সরকারি শিশুসদন, ছোটমণি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে কল্যাণকেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণকেন্দ্রেও থাকবে খাবার ও বিনোদনের বিশেষ ব্যবস্থা।

ঈদের দিবাগত রাতে নির্দিষ্ট সরকারি ভবনগুলোতেও আলোকসজ্জা করা হলেও এবার করোনা ভাইরাসের কারণে তা হচ্ছে না ।
ঈদ উপলক্ষে দৈনিক পত্রিকাগুলো ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। আর এই আনন্দকে বাড়িয়ে দিতে আছে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

সব মিলিয়ে ঈদের আনন্দে সবাই মেতে উঠুক এটাই কামনা। করোনা ভাইরাসের কারণে ঘরে বসেই পরিবারের সকলের সাথে সময় কাটানো এই হোক আমাদের অগ্গিকার। ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন। অন্যকে ভালো রাখুন।

আপনার মতামত লিখুন :