রাজধানীতে এত টু লেট আগে কখনো দেখিনি

বার্তা বিভাগবার্তা বিভাগ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  04:19 PM, 28 June 2020

শাহাব উদ্দিন (রাফেল ) স্টাফ রিপোর্টারঃ নাগরিক জীবনের একরাশ ব্যস্ততা, এই ব্যস্ততার মাঝে অনেক সংগ্রাম করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন এই ঢাকা শহরে ।হটাৎ করেই যেন মনে হচ্ছে সবার মাঝেই হতাশার কোলাহল।রাজধানীতে এত টু-লেট কখনো দেখিনি এর আগে।প্রায় সব বাড়িতেই ভাড়ার নোটিশ কল্যানপুর,শ্যামলী,আদাবর,মোহাম্মদপুর,মিরপুর,ধানমণ্ডি সহ ঢাকার প্রায় সব এলাকাতেই টু লেট লটকিয়ে রাখছে বাসা মালিকরা। অজস্র মানুষ ঢাকা ছাড়ছে।তাহলে দোষ কি শুধুই করোনার ?

৯০ দশকে মানুষের আর্থিক অবস্থা এখনকার চেয়ে অনেক খারাপ ছিল। কিন্তু এই গরীব মানুষদেরই আজীবন যথেস্ট সেভিংস ছিলো, খেয়ে না খেয়ে শহরের কোনায় এক টুকরো জমি ছিলো। গ্রামে একটা স্থায়ী ঠিকানা ছিলো। পরিবার গরিবনা হালে চললেও মায়ের আঁচলের গিঁট আর ডানোর খালি ডিব্বাতেও কয়েক গাছি টাকা থাকতোই।

আর এখনকার মানুষদের কার্ড ভর্তি লোন, ইন্সটলমেন্ট, ব্যাংক লোন। জমি খবর নেই অথচ শহরের প্রাণকেন্দ্রে টাইলসওয়ালা ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতে পারলেই খুশি। সঞ্চয়ের খবর নেই অথচ ঘোরাঘুরি আর রেস্টুরেন্টে খেতে পারলেই খুশি। পকেটে টাকা নেই তাই মন মানসিকতা মলিন, অথচ পার্লারে/সেলুনে হাজার টাকা খরচে ফেসিয়াল করে চামড়া চকচকে করতে পারলেই হলো।

গ্রামের শেকড় ভুলে গেছে গর্বের সাথে, অথচ গ্রাম থেকে বছরে দু চার আসা বস্তা ভর্তি আম কাঠাল বা চাল/মুড়ির কি বরকত সেটা বুঝতে চায়নি। ছুটিতে কক্সবাজারের ফাইভ স্টার হোটেলে খরচ না করে গ্রামের বাড়িতেও যে বেড়ানো যায় সেটা বুঝেনি। আগে মানুষ কয়েক বছরে এক আধবার লাক্সারি ট্যুর দিতো। আর এখন প্রতি বছর লাখ টাকা খরচ করে ইন্সটলমেন্টে হলেও দেশ-বিদেশে ঘুরতে যাচ্ছে দুইটা ফটো তোলার জন্য।

আমি গত সাত আট বছরে এই শহরে মধ্যবিত্ত বলে কিছু দেখিনি। সবার চলাফেরা ছিল প্রায় একরকম। তবে এখন দেখছি, গত কয়েক মাস ধরে। এত খরচ আর ভোগপণ্যের দাস হয়ে আজীবন বর্তমানে বেঁচে থাকতে গিয়ে দুই-তিন মাসের ভবিষ্যত নিরাপত্তাটা নিয়েও ভাবার ক্ষমতা হারানো এই শহরবাসীদের এখনকার বাস্তবতা আসলেই খুবই দুঃখজনক।

আপনার মতামত লিখুন :